“তথ্য সবার অধিকার, থাকবো না কেউ পিছিয়ে আর” প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সুনামগঞ্জে ‘আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস ২০১৯’ পালিত হয়েছে। আজ (২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯) সকাল ১০টায় সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর সহযোগীতায় র্যালী ও আলোচনা সভার মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করা হয়।
জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর অনুপ্রেরণায় গঠিত সুনামগঞ্জের সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), স্বচ্ছতার জন্য নাগরিক (স্বজন), ইয়ুথ এনগেজমেন্ট এ্যান্ড সাপোর্ট (ইয়েস) গ্রুপ ও ইয়েস ফ্রেন্ডস গ্রুপের সদস্যবৃন্দ, স্থানীয় সুধীবৃন্ধ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ, শিক্ষার্থীবৃন্দ এবং টিআইবি’র কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ র্যালী ও আলোচনাসভায় অংশ নেন। ‘আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস ২০১৯’ উদযাপনের র্যালিটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, সুনামগঞ্জ হতে শুরু হয়ে জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহ প্রদক্ষিণ করে পুনরায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এসে শেষ হয়। র্যালি পরবর্তী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সভাপতিত্বে এক উন্মুক্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় তিনি তথ্য অধিকারকে মানাবধিকার উল্লেখ করে এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার ও সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের নেয়া বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের মধ্যে বিভিন্ন সরকারি অফিসে নাগকির সনদ স্থাপন, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিযুক্তি, কর্মকর্তাদের ট্রেনিং, বিভিন্ন সভা-সেমিনার ও সিম্পোজিয়ামের উল্লেখ করেন। তিনি ভবিষ্যতে আরও বেশি করে নাগরিকদের তথ্যে অভিগম্যতা নিশ্চিতের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচীর পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন।
উল্লেখ্য, আজকের অবাধ তথ্য প্রবাহের বিশ্বে তথ্য পাওয়া কিংবা জানা নাগরিকদের জন্য যে একটি মৌলিক অধিকার সে বিষয়টি স্বীকৃতি দিতে ২৮ সেপ্টেম্বর, ‘আন্তর্জাতিক সার্বজনীন তথ্য অধিকার দিবস’ হিসেবে ২০১৫ সালে ঘোষনা দেয় জাতিসংঘের অঙ্গ সংস্থা ইউনেস্কো। বাক স্বাধীনতা, চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতার অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে তথ্য পাওয়ার অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়ে বাংলাদেশেও ২০০৯ সালে প্রণীত তথ্য অধিকার আইনটি এবছর এক দশক অতিক্রম করলো। এ প্রসঙ্গে সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), সুনামগঞ্জের উপদেষ্টা ও আইনজীবি হোসেন তওফিক চৌধূরী উল্লেখ করেন, জনগণের তথ্য অধিকার নিশ্চিত করা হলে আমাদের উন্নয়নের বেগ বাড়বে এবং সকলের জবাবহিদিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। সনাক সভাপতি ধূর্জটি কুমার বসু তথ্য প্রদান করার জন্য সরকারি কর্মকর্তাদেরকে সচেতন হবার আহ্বান জানান এবং এটিকে সেবকের সাথে প্রজাতন্ত্রের মালিকের অধিকারের বিষয়টি তুলনা করেন। সনাক সুনামগঞ্জের সহ-সভাপতি ও দৈনিক প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক এ্যাড. খলিল রহমান তথ্য প্রদানে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের এখনও দোদুল্যমান মানসিকতার বিষয়ে আলোকপাত করে এটিকে কাটিয়ে উঠার আহ্বান করেন। তথ্যে জনগণের অভিগম্যতা বৃদ্ধি ও তথ্য অধিকার আইনের সঠিক ব্যবহার ও প্রয়োগ নিশ্চিত করতে ইয়ূথ এনগেজমেন্ট এ্যান্ড সাপোর্ট (ইয়েস) গ্রুপ সুনামগঞ্জের সহ-দলনেতা ইমরান হোসেন বিভিন্ন অফিসে দায়িত্বপ্রাপ্ত তথ্য কর্মকর্তার নাম সম্বলিত তথ্য বোর্ড স্থাপনের আহ্বান করেন। আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক, জেলা তথ্য অফিসার, সনাক সুনামগঞ্জ এর সদস্যবৃন্দ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ প্রমুখ।
উক্ত আলোচনা সভায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও তথ্য কমিশন প্রদত্ত তথ্য অধিকার বিষয়ে ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। সভায় তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ এর উপর একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনও উপস্থাপন করেন সহকারী কমিশনার (তথ্য ও অভিযোগ শাখা) আখতার জাহান সাথী।